নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ০৩ মে, ২০২১
বাংলাদেশ একটি ইসলামী বিপ্লব সংগঠিত করার পরিকল্পনায় বিএনপি`র সায় ছিলো। এই পরিকল্পনার মূল অংশ ছিলো ইসলামী বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশ ইসলামী প্রজাতন্ত্র হবে এবং ইসলামী প্রজাতন্ত্র চলবে শরিয়া আইন অনুযায়ী। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল বিএনপি ওই পরিকল্পনায় সম্মতি দিয়েছিলো এবং এ ধরনের ইসলামী বিপ্লব যারা করতে চেয়েছিলো তাদের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছিলো। এরকম তথ্য প্রমাণ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাছে এসেছে। আর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এসব এসব তথ্য প্রমাণ পেয়ে বিস্মিত এবং হতবাক হয়েছে। বিশেষ করে বিএনপির মতো একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল কিভাবে এই ধরনের একটি মৌলবাদী তৎপড়তার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয় তা নিয়ে হতবাক হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ ২০১৩ সালের ৫ মে একটি ইসলামী বিপ্লবের নীলনকশা প্রণীত হয়েছিলো। সেই নীলনকশা অনুযায়ী বাংলাদেশে ইসলামী প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে এমন একটি দলিলের সন্ধান মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর পেয়েছে। জানা যায় যে, রাজনৈতিক সূত্র থেকে তারা এটি সংগ্রহ করেছে। ওই দলিলে বলা হয়েছিলো যে, ইসলামী বিপ্লবের পর রাষ্ট্রপতি হবেন আল্লামা আহমদ শফী এবং প্রধানমন্ত্রী হবেন জুনায়েদ বাবুনগরী। ইসলামী শাসনতন্ত্র রচিত হবে এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র রচনার জন্য আলেমদের সমন্বয় একটি টিম তৈরি করার লিখিত দলিলও পাওয়া গেছে। সেই দলিল অনুযায়ী বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর শরিয়া আইন অনুযায়ী এসব কিছু পরিচালিত হবে। আর এটির মূল উদ্যোক্তা ছিলো হেফাজতে ইসলাম।
২০১৩ সালে হেফাজতের ওই উদ্যোগ ব্যর্থ হলেও এখনো হেফাজত ওই পরিকল্পনা থেকে সরে আসেনি। ২০১৩ সালে এই পরিকল্পনা যখন বিএনপি জানতে পারে তখন বিএনপি`র অন্তত তিনজন নেতা হেফাজতের নেতাদের সাথে দেখা করেন এবং তাদের সর্বসম্মত সমর্থন জানান। বেগম খালেদা জিয়াও ইসলামী প্রজাতন্ত্র হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো আপত্তি প্রকাশ করেননি। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে, বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক দলগুলো উদারনৈতিক গণতন্ত্র চর্চা করে তাদের মধ্যে বিএনপির অন্যতম। এরকম একটি দল যখন বাংলাদেশকে ইরানের মতো ইসলামী রাষ্ট্র বানাতে চায় তখন তাতে বিএনপি`র সম্মতি দেওয়াটা এক ধরনের বিস্ময়কর।
মার্কিন প্রশাসন সবসময় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা, সম্পর্ক রক্ষা করে চলে। তারা কখনোই কোনো মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপ করে না। কাজেই বিএনপি`র সম্পর্কে পাওয়া এ ধরনের তথ্য, বিশেষ করে ইসলামী বিপ্লবে সম্মতি সংক্রান্ত তথ্য বিএনপি`র সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের আরও দূরত্ব তৈরি করবে এবং এর মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি`র যে পরিচিতি সেই পরিচিতও ক্ষুন্ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করে যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেশে জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীরাই ইসলামী বিপ্লবের স্বপ্ন দেখে। আল-কায়েদা, তালেবানের মতো উগ্রবাদীরাই ইসলামী শাসনতন্ত্র কায়েম করতে চায়। আর বিএনপি তাদেরকে সমর্থন দেখিয়ে বিএনপিও উগ্র মৌলবাদী দলের তালিকায় নিজেদের নাম লেখালো বলেই মনে করছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।